প্রচ্ছদ সারাদেশ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভারতের হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ, যে কথা হলো

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভারতের হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ, যে কথা হলো

সারাদেশ: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা। বৈঠকে চলমান বন্যা পরিস্থিতি এবং এর নানা দিক ও করণীয় নিয়ে কথা হয়েছে বলে জানা গেছে। আজ বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিকেল ৪টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন তিনি। প্রণয় ভার্মা বলেন, বাংলাদেশের সাথে ভারত কাজ করতে চায়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ত্রিপুরায়, বাঁক থেকে অটো পানি ঢুকেছে। এর আগে, এদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপদেষ্টাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ড. ইউনূসের সভাপতিত্বে বৈঠকে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন ও সংসদ উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমসহ অন্যান্য উপদেষ্টারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে এরই মধ্যে বাংলাদেশে সৃষ্ট বন্যা নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া সেন্টার থেকে বিবৃতি দিয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভারত কোনো বাঁধের মুখ খুলে দেয়নি বলে দাবি করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অতিরিক্ত পানির চাপে সেটি একা একাই খুলে গেছে বলে দাবি করেছে তারা। এ ঘটনার মধ্যে তারা বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন।ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি বলা হয়, আমরা বাংলাদেশকে বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখেছি যে, ত্রিপুরার গোমতী নদীর উজানে ডুম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ায় পূর্ব সীমান্তের জেলাগুলোতে বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। বাস্তবে এটি সঠিক নয়। আমরা উল্লেখ করতে চাই যে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদীর ক্যাচমেন্ট এলাকায় গত কদিন ধরে এই বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাংলাদেশে বন্যা মূলত বাঁধের নিচের দিকের এই বৃহৎ ক্যাচমেন্টের পানির কারণে। এতে আরও বলা হয়, ডুম্বুর বাঁধটি সীমান্ত থেকে বেশ দূরে অবস্থিত – বাংলাদেশের ১২০ কিলোমিটারের বেশি উজানে। এটি একটি কম উচ্চতার (প্রায় ৩০ মিটার) বাঁধ, যা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে এবং একটি গ্রিডকে ফিড করে। এখান থেকে বাংলাদেশও ত্রিপুরা থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ টেনে নেয়।

প্রায় ১২০ কিলোমিটার নদীপথে আমাদের অমরপুর, সোনামুড়া এবং সোনামুড়া ২-এ তিনটি জলস্তর পর্যবেক্ষণ সাইট রয়েছে। সমগ্র ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের সংলগ্ন জেলাগুলোতে গত ২১ আগস্ট থেকে ভারি বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। ভারি প্রবাহের কারণে নিজে থেকেই এসব এলাকা থেকে পানি প্রবাহিত হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, অমরপুর স্টেশন একটি দ্বিপাক্ষিক প্রটোকলের অংশ, যার অধীনে আমরা বাংলাদেশে বন্যার রিয়েলটাইম তথ্য প্রেরণ করছি। তথ্য-উপাত্ত দেখাচ্ছে, ২১ আগস্ট দুপুর ৩টা পর্যন্ত বাংলাদেশে বন্যার রিয়েলটাইম তথ্য পাঠানো হয়েছে। তবে বন্যার ফলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হওয়ায় ৬টার দিকে যোগাযোগে সমস্যা হয়েছে। তবুও, আমরা জরুরি তথ্য সরবরাহের জন্য তৈরি অন্যান্য মাধ্যমে যোগাযোগ বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অভিন্ন নদীতে বন্যা একটি যৌথ সমস্যা। এটি উভয় দেশের জনগণের জন্য দুর্ভোগ সৃষ্টি করে এবং এর সমাধানের জন্য ঘনিষ্ঠ পারস্পরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। যেহেতু দুটি দেশ ৫৪টি অভিন্ন আন্তঃসীমান্ত নদী শেয়ার করে, তাই নদীর পানি সহযোগিতা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত আলোচনার মাধ্যমে পানি সম্পদ এবং নদীর পানিব্যবস্থাপনার সমস্যা ও পারস্পরিক উদ্বেগ সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ’