কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পদ্মা নদীতে জলদস্যুদের হামলায় নৌকা থেকে পানিতে পড়ে দুই পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ১৬ ঘণ্টার ব্যবধানে নদী থেকে এএসআই সদরুল আলম ও এএসআই মুকুল হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
এর আগে রোববার (২৭ অক্টোবর) দিবাগত রাতে উপজেলার কয়া ইউনিয়নের বেড় কালোয়া এলাকায় পদ্মা নদীতে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে নৌকা থেকে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন পুলিশের দুই সহকারী উপপরিদর্শক। তাদের মধ্যে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ এলাকায় নদী থেকে সদরুল আলমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরে ১৬ ঘণ্টার পর আজ বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ৭টার দিকে পাবনার সুজানগর উপজেলার মোহনগঞ্জ এলাকায় নদী থেকে এএসআই মুকুল হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমারখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম।
নিহত সদরুল আলম ও মুকুল হোসেন কুমারখালী থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ছিলেন। আহতরা হলেন- এক পুলিশ সদস্য, কয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য ছানোয়ার হোসেন ও ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য আনোয়ার হোসেন।
কুমারখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, রোববার দিবাগত রাতে মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পদ্মার ওপারে চর সাদীপুর এলাকায় ছয়জন পুলিশের একটি টিম অভিযানে যাচ্ছিল। এ সময় পদ্মা নদীতে তাদের ওপর জলদস্যুরা হামলা করে। জলদস্যুদের হামলায় পুলিশের দুই এএসআইয়ের মৃত্যু হয়েছে। ১৬ ঘণ্টার ব্যবধানে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন ও জেলেরা জানান, কুমারখালীর বেড় কালোয়া এলাকায় পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে জাল ফেলে মাছ ধরছিলেন জলদস্যুরা। এসময় তাদের সঙ্গে পুলিশের বাগবিতণ্ডা হয়। এতে পুলিশের ওপর হামলা করে জলদস্যুরা। এ সময় তাদের হামলায় এক পুলিশ সদস্য ও দুই ইউপি সদস্য আহত হন এবং দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিখোঁজ হন। পরে এএসআই সদরুল ও মুকুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ওই এলাকায় জলদস্যুদের প্রধান ইয়ারুলের নেতৃত্বে পদ্মায় একটি বাহিনীও আছে। তাদের লোকজন পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে গিয়েছিলেন ওই পুলিশ সদস্যরা। কীভাবে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।