রাজধানীর বাড্ডায় বিথী আক্তার (২৪) নামে এক তরুণীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী কমল হোসেনের বিরুদ্ধে। স্বজনদের বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, ডিভোর্স দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ছুরিকাঘাত করে স্ত্রী বিথীকে হত্যা করেছে স্বামী কমল।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে আজ (মঙ্গলবার) ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই ইয়াসিন বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
নিহতের বড় ভাই ইয়াসিন জানান, আমার বোন টঙ্গীর একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করত। ৬ বছর আগে কমলের সঙ্গে আমার বোনের বিয়ে হয়। কমল আগে সনাতন ধর্মের ছিল। পরে সে ইসলাম গ্রহণ করে নাম পরিবর্তন করে ইয়ামিন রাখে। কমল কোনো কাজ করত না। এ নিয়ে আমার বোনের সঙ্গে প্রায় ঝগড়া হতো। পরে আমার বোন তাকে ডিভোর্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বেশ কিছুদিন আগে তাকে ডিভোর্স লেটার পাঠায়।
তিনি আরও জানান, সোমবার বিথীকে তার স্বামী মোবাইল ফোনে বাড্ডা ডিআইডি প্রজেক্ট এলাকায় ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে। এই ঘটনায় আমি বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় মামলা করেছি। মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে দাফনের জন্য ময়মনসিংহে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি। সেখানে জানাজা শেষে দাফন করা হবে।
তিনি আরো বলেন, আমার বোনের ছোট দুটি বাচ্চা আছে। এখন তাদের কী হবে? কে তাদের লালনপালন করবে? আমি আমার বোনের হত্যার সঠিক বিচার চাই।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, সোমবার দুপুরের দিকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগের মর্গ থেকে বিথীর মরদেহ উদ্ধার করি। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠাই। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিহতের স্বজনদের বরাতে তিনি জানান, ঘাতক স্বামী কমল আগে সনাতন ধর্মের ছিল। পরে সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে হয় ইয়ামিন। বিথী আক্তার টঙ্গী এলাকায় তার দুই সন্তানকে নিয়ে মায়ের সঙ্গে বাস করতেন এবং তার স্বামী কমল খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগ এলাকায় থাকতেন। একসময় বিথী আক্তার তার স্বামী কমলকে নিয়ে বাড্ডা ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকায় বসবাস শুরু করেন। কিছুদিন পর একাধিক বিষয়ে ঝগড়ার সূত্র ধরে তারা আলাদা বসবাস শুরু করেন। একপর্যায়ে বীথি কমলকে ডিভোর্স লেটার পাঠায়।
পরে গতকাল (সোমবার) বিথী আক্তারকে টঙ্গী থেকে বাড্ডা ডিআইডি প্রজেক্টের ১৩ নাম্বার রোডে ডেকে আনে স্বামী কমল। সেখানে কমল বিথি আক্তারকে ডিভোর্স লেটার তুলে নেওয়ার কথা বলেন। এই নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে কমল তাকে ছুরিকাঘাত করে। পরে আহত অবস্থায় কোমল নিজেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় কমল।
ওসি আরো জানান, আমরা ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। যাচাই-বাছাই চলছে। খুব দ্রুতই আমরা কমল ওরফে ইয়ামিনকে আইনের আওতায় নিয়ে আসব।
ঘটনার বিষয়ে জানতে কমলকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।