
নৌ পুলিশের সাবেক কনস্টেবল এমদাদুল হকের বিরুদ্ধে সমকামিতায় রাজি না হওয়ায় মো. ফজলুল হক (৫৮) নামের এক বৃদ্ধকে গুরুতরভাবে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে।
নৌ পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অভিযুক্ত কনস্টেবল এমদাদুল হক আগে নৌপুলিশ কর্মরত ছিল, বর্তমানে তিনি প্রেষণে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে সংযুক্ত আছেন।
উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশ বলছে, অভিযোগ ভিত্তিতে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার সকালে অফিসে যাওয়ার সময় রাজধানীর আব্দুল্লাপুর এলাকায় অভিযুক্ত পু্লিশ সদস্য ভুক্তভোগীকে কুপ্রস্তাব দেয়। তিনি প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে আহত করে, এবং মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়।
বৃদ্ধের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে অভিযুক্ত সেখান থেকে চলে যায়। পরে পরিবারের সহায়তায় মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভুক্তভোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগীর বড় ছেলে জহিরুল ইসলাম খান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, বাবা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এখনো শরীরে জঘম ও ব্যথা রয়েছে।
ভুক্তভোগীর বড় ছেলে এই ঘটনার বিচার দাবি করে বলেন: দীর্ঘদিন ধরে আমার বাবা এই পু্লিশ সদস্যের হয়রানির শিকার। তার কারণে আমাদের পরিবারও ধ্বংসের পথে।
জানা যায়, রাজধানীর উত্তরখানের ট্রান্সমিটার গলির একটি মেসে প্রায় ৯ মাস আগে ভুক্তোভুগী ফজলুল হক ও নৌ পুলিশের কনস্টেবল এমদাদুল হক একই সঙ্গে থাকতেন।
ভুক্তভোগী ফজলুল হক বলেন, উত্তরখানের মেসে একসাথে অবস্থান করায় এমদাদুল আমার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে এবং জোরপূর্বক আমাকে সমকামিতায় জড়াতে বাধ্য করে। তার কাছ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে মেস ছেড়ে দেই। কিন্তু তিনি মাঝে মাঝেই ফোন দিয়ে বিরক্তের পাশাপাশি হত্যার হুমকিসহ মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করত। এছাড়াও ধারাবাহিকভাবে মানসিক নির্যাতন করত।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে নৌ পুলিশের সদস্য এমদাদুল হক চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, সমকামিতার বিষয়টি সামনে এনে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে এমনটা করা হচ্ছে। আমরা একই গ্রামের পাশাপাশি বাসিন্দা। কিছু টাকার ধার দেনা নিয়ে আমাদের সমস্যা ছিল। সেটা পারিবারিকভাকে মিটিয়ে ফেলব।
তবে গতকাল ভুক্তভোগীকে পেটানোর ঘটনা জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেন নি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মহিবুল্লাহ জানান, এ বিষয়ে আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে মামলার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে নৌ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশিক্ষণ, আইন ও গণমাধ্যম) সাথী শর্মা চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, নৌপুলিশের কোনো সদস্যদের এমন আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। অভিযোগটির সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্রঃ চ্যানেল আই