শেরপুর-২ (নালিতাবাড়ী-নকলা) আসনের ছয়বারের সংসদ সদস্য ছিলেন মতিয়া চৌধুরী। তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, মন্ত্রী ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংসদ উপনেতা ছিলেন।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
তার মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছলে নালিতাবাড়ী ও নকলার সাধারণ মানুষ অপেক্ষায় ছিলেন মতিয়া চৌধুরীর শেষ ইচ্ছা পূরণের জন্য। কারণ মতিয়া চৌধুরী সাধারণ মানুষের ভালোবাসার ঋণ পরিশোধ করতে প্রকাশ্যে জনসভায় বারবার ঘোষণা দিয়েছেন, মৃত্যুর পর যদি তার লাশ পাওয়া যায়, সে লাশ যেন তার নির্বাচনী এলাকা নালিতাবাড়ীর শাহী মসজিদ গোরস্থানে সাধারণ মানুষের সঙ্গে দাফন করা হয় এবং কবরটা যেন পাকা না করা হয়।
কিন্তু তার পারিবারিক সিদ্ধান্তে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় গুলশান আজাদ মসজিদ মাঠে জানাজা শেষে মিরপুর বুদ্ধিজীবী গোরস্থানে দাফন করা হবে। এ ঘোষণায় এলাকাবাসী মানসিক কষ্ট পেয়েছেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ বকুল বলেন, মতিয়া আপার মৃত্যুর খবর পেয়েই ঢাকায় যাই। সাধারণ মানুষের কাছে দেওয়া মতিয়া আপার অসিয়ত রক্ষা করার জন্য; কিন্তু তার পরিবারের সদস্যরা তা কর্ণপাত করেননি।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাজী মোশারফ হোসেন জানান, তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সাধারণ মানুষের পক্ষে তার মরদেহ নালিতাবাড়ী-নকলায় এনে জানাজা শেষে বুদ্ধিজীবী কবর স্থানে দাফন করার অনুমতি চেয়েছিলাম। তাতেও তার পরিবার রাজি হননি।
মতিয়া চৌধুরীর ভাই মাসুদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, এলাকার মানুষের দাবি থাকলেও দেশের বর্তমান পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনায় মতিয়া চৌধুরীকে নিজের নির্বাচনি এলাকায় নেওয়া হচ্ছে না। বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সিটি করপোরেশনের কাছে দাফনের জন্য জায়গা চাওয়া হয়েছে। পেলে সেখানে, না পেলে একই গোরস্থানে তার স্বামী বজলুর রহমানের কবরেই তাকে দাফন করা হবে।
মতিয়া চৌধুরী শেরপুর-২ আসনে প্রথম সংসদ সদস্য হন ১৯৯১ সালে। এরপর ২০০১ সাল ছাড়া প্রতিটি সংসদ নির্বাচনেই নির্বাচিত হন। দীর্ঘ তেত্রিশ বছর সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য স্থলবন্দর, রাবার বাঁধ, ইকোপার্ক, রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা উন্নয়ন করেছেন। সরকারিভাবে সাধারণ মানুষের জন্য বরাদ্দ নিজ হাতে পৌঁছে দিতেন।
মতিয়া চৌধুরী নেই, কিন্তু তার প্রতি সাধারণ মানুষের ভালোবাসা থাকবে সব সময়।
সুূুত্রঃ যুগান্তর