প্রচ্ছদ জাতীয় শেখ হাসিনার পলায়নের পূর্ববর্তী ১ ঘণ্টা এবং পরবর্তী ৪ ঘণ্টার অজানা রুদ্ধশ্বাস...

শেখ হাসিনার পলায়নের পূর্ববর্তী ১ ঘণ্টা এবং পরবর্তী ৪ ঘণ্টার অজানা রুদ্ধশ্বাস কাহিনী

জাতীয়: শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছেন ৫ আগস্ট। ড. ইউনূসের সরকার শপথ গ্রহণ করেছেন ৮ আগস্ট। ইতোমধ্যে সমস্ত এমপি এবং মন্ত্রীদের লাল পাসপোর্ট বা কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল হয়ে গেছে ২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার। এখন তাহলে শেখ হাসিনা ভারতে কীভাবে আছেন? তার স্ট্যাটাস কী? বাংলাদেশের পত্রিকায় বলা হয়েছে, ১৫ বছর ৭ মাস ধরে প্রধানমন্ত্রী থাকায় তার কাছে নরমাল পাসপোর্ট অর্থাৎ সবুজ রংয়ের পাসপোর্ট নাই। অন্যকথায়, তার হাতে কোনো পাসপোর্টই নাই। আরো বড় কথা হলো, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৫০টিরও বেশি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই পটভূমিতে শেখ হাসিনাকে ভারতে রাখার উদ্দেশ্য কী? ভারত সরকার কি তাকে পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম বা রাজনৈতিক আশ্রয় দেবে?

আসল কথা হলো, বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতের একটি বড় ধরনের গেম প্ল্যান আছে। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ভারতের কোনো নির্ভরযোগ্য এবং শক্তিশালী এজেন্ট নাই। তাই এখনও বাংলাদেশে প্রভূত্ব বজায় রাখায় ভারতের একমাত্র ভরসা শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ। সেজন্যই শেখ হাসিনাকে ভারত বিগত সাড়ে ১৫ বছর অন্ধ সমর্থন দিয়ে এসেছে এবং এখনও বাংলাদেশের ১৭ কোটি লোকের ইচ্ছার বিরুদ্ধে শেখ হাসিনাকে তার আশ্রয়ে রেখেছে। বাংলাদেশে হারানো আধিপত্য ফিরে পাওয়ার জন্য শেখ হাসিনাকে সুস্থ সবল অবস্থায় ভারতের যে কতখানি দরকার সেটি বাংলাদেশ থেকে হাসিনার পলায়নের অব্যবহিত পূর্বের ১ ঘণ্টা এবং সি-১৩০জে বিমানে ভারতে পৌঁছার দুই ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের রুদ্ধশ্বাস মুহূর্তগুলো জানলে বোঝা যাবে। এই মুহূর্তগুলোর বর্ণনা দিয়েছে ভারতের ‘নতুন বাংলা’ নামক ইউটিউব চ্যানেল। আমরা নীচে তাদের প্রদত্ত তথ্যসমূহ পরিবেশন করছি।

১৬ জুলাই হাসিনার বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়ে গেলে ভারত একাধিক মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করে। নতুন দিল্লির প্রবীণ সাংবাদিক উত্তম গুহ এ সম্পর্কে ইংরেজি দৈনিক দি মিরর এশিয়ায় যে পলিটিক্যাল ডেসপ্যাচ্ লিখেছেন সেটি একদিকে যেমন শিহরণমূলক, অন্যদিকে তেমনি ভয়াবহ। শেখ হাসিনা পদত্যাগে বাধ্য হওয়ার ২৪ ঘণ্টা আগে এবং বাংলাদেশ ত্যাগের পরবর্তী ৪ ঘণ্টার কাহিনী যেমন থ্রিলিং, তেমনি রোমাঞ্চকর। এই কাহিনী স্পাই থ্রিলারকেও হার মানায়। দিল্লীর কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে উত্তম গুহ মিরর এশিয়ায় লিখেছেন, ২০২৩ সালের মে মাসে মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণার পর শেখ হাসিনার মালদ্বীপ সফরকালে তিনি ও শেখ রেহানা ‘র’ এর তৎকালীন চিফ ও বাংলাদেশে দায়িত্ব পালন করা দু’জন সাবেক হাই কমিশনারের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন। মূলত ওই বৈঠকেই যুক্তরাষ্ট্রকে বশ করার পরিকল্পনা ঠিক করা হয়। এই পরিকল্পনাতেও ‘র’ সফল হয়েছে। তাই ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা ও ‘র’ উভয়েই নির্ভার ছিল।

শেখ হাসিনা তার সর্বশেষ ভারত সফরের সময় ৩টি সমঝোতা স্মারক সই করেন। এর মধ্যে রেল ট্রানজিট বা করিডোর স্মারকটি ছিল সবচেয়ে বিপদজনক এবং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের খর্বকারী। চুক্তির একটি ধারায় বলা হয়েছে, ‘চলন্ত রেলে ভারত কি পরিবহন করবে তা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ দেখতে ও জানতে পারবে না। তবে ভারতীয় রেল বাংলাদেশ ভূখণ্ডে কোনো নিরাপত্তাজনিত সংকটে পড়লে বাংলাদেশ নিরাপত্তা বাহিনীকে সহযোগিতা করবে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী।’ অর্থাৎ বাংলাদেশে ভারতের সৈন্য প্রবেশ করতে পারবে তাদের রেলকে নিরাপত্তা দেয়ার কথা বলে। অনেকেই মনে করছেন, এই চুক্তি করে ভারত মূলত বাংলাদেশে সৈন্য পাঠানোর এক ধরনের বন্দোবস্ত করে রেখেছিল।

শেখ হাসিনার চীন সফর নিয়ে যখন দিল্লীতে ‘র’এর কেন্দ্রীয় সদর দপ্তরে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে তখনই ঢাকায় ছাত্ররা কোটা আন্দোলন নিয়ে রাজপথে নেমে আসে। এই আন্দোলনের গতিবিধির উপর নজর রাখার বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এক নবীন বাঙালি ‘র’ কর্মকর্তাকে।

ওই বাঙালি কর্মকর্তার ১৭ জুলাই পাঠানো তথ্য পেয়ে বিচলিত হয়ে পড়েন ‘র’ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। দিল্লীতে ‘র’এর কাছে তথ্য আসে ঢাকায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর গুলির নির্দেশ দিয়েছে পুলিশের হাইকমান্ড। শুরুতে এটা পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজির আহমেদের অনুসারীদের কাজ হিসেবে ভাবলেও পরে তারা জানতে পারে সরকারের উচ্চমহল বেশ ঘৃণাসূচক শব্দ উচ্চারণ করেই গুলির নির্দেশ দিয়েছে। পুলিশ গুলি করে দমানোর চেষ্টা করলেও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ১৮ জুলাই উভয় দেশের সরকার বিচলিত হয়ে পড়ে। দিল্লীতে শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বেশ কয়েকজন ভারতীয় কূটনীতিকের সাথে আলোচনা করে জানায় পরিস্থিতি ‘বিডিআর বিদ্রোহের চেয়ে ভয়াবহ’। পুতুল বলেন Our students have
revolted. এরপর শেখ হাসিনার সঙ্গে ‘র’ প্রধানের সরাসরি ফোনালাপ হয়। ওই আলাপে কারফিউ জারির বিষয়টি উঠে আসে এবং শুক্রবার জুমার নামাজের পর আন্দোলনে জামায়াত-শিবির প্রবেশ করেছে বলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতকে বার্তা দেওয়া হয়। টেলিফোন আলোচনায় ‘র’এর পক্ষ থেকে কারফিউ জারির পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি দ্রুত একটি দল পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। শেখ হাসিনা কারফিউ জারি করতে রাজি হন।

‘র’ এবং শেখ হাসিনার ধারণা ছিল কারফিউ জারি ও ইন্টারনেট বন্ধ করে দিলে পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। কিন্তু শনিবার ঢাকায় কারফিউ ভেঙে মানুষ রাস্তায় নেমে আসে এবং অর্ধশত নিহত হয় বলে তথ্য যায় দিল্লীতে। এমন একটি ক্রিটিক্যাল অবস্থায় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ প্রধান দিল্লীতে একটি ভয়াবহ বার্তা পাঠান। বার্তায় বলা হয়, ‘কাশ্মীরের অভিজ্ঞতা পূর্বে কাজে লাগাও। প্রয়োজনে পূর্বে আরেকটা কাশ্মীর বানাও। তবুও শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখো।’ সিদ্ধান্ত হয়, কাশ্মীর আন্দোলনে যেভাবে লাশ গুম করা হয়েছিল বাংলাদেশেও তাই করতে হবে। কাশ্মীরের মতই বাড়ি বাড়ি তল্লাশি শুরু করে র‌্যাব ও পুলিশের যৌথবাহিনী। এ সময় ঢাকায় ভারত বিরোধী নানা গুঞ্জন তৈরি হয়। এর মধ্যে একটি হচ্ছে, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে হিন্দিতে কথা বলতে শোনা যায় কিছু লোককে।

আলোচ্য রিপোর্টে আরো কিছু তথ্য দেওয়া হয়েছে। সেগুলো উল্লেখ না করে আমরা চলে যাচ্ছি শেখ হাসিনার পরিবহন বিমান ত্রিপুরা থেকে আকাশে ওড়ার পর কী ঘটেছিল সেসব ঘটনায়। ৫ আগস্ট সোমবার দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ৪ ঘণ্টার রুদ্ধশ^াস ঘটনাবলীর ওপর দিল্লী সরাসরি নজর রেখেছিল।
তার আগে বলা দরকার, এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ৩১ জুলাই বুধবার শেখ হাসিনা ভারতীয় রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মাকে ডেকে পাঠান এবং তার সাথে আড়াই ঘণ্টা একান্ত আলোচনা করেন। ‘নতুন বাংলার’ ঐ ভিডিও ফুটেজে বলা হয় যে, শেখ হাসিনা প্রণয় ভার্মাকে বলেন যে, তার জীবন বিপন্ন। তার প্রাণ রক্ষার জন্য ভারত যেন হস্তক্ষেপ করে। প্রণয় ভার্মা বলেন যে, এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি কিছু বলতে পারছেন না। তবে বর্তমান আঞ্চলিক পরিস্থিতিতে ভারতের হস্তক্ষেপ সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন না।

যখন বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরা ১০ কি.মি. দূরে তখন থেকেই ভারত ঐ হেলিকপ্টারের সাথে সরাসরি মনিটরিং শুরু করে। ত্রিপুরার একটি বিএসএফ বিমান ঘাঁটিতে আগে থেকেই পরিবহন বিমান সি-১৩০জে হাসিনার জন্য অপেক্ষা করছিল। ঐ বিমানের মধ্যে ছিলেন ভারতের ৭ জন সিনিয়র মিলিটারি অফিসার।

বাংলাদেশের হেলিকপ্টারটি ত্রিপুরার বিএসএফ বিমান ঘাঁটিতে অবতরণ করার সাথে সাথেই শেখ হাসিনাকে বলা হয় যে, ১৫ মিনিটের মধ্যেই তাকে সি-১৩০জে বিমানটিতে উঠতে হবে। কারণ, হাসিনার ভয়াবহ নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে। সমস্ত ব্যাপারটি কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে সম্পন্ন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সম্মতিক্রমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর কয়েকজন সিনিয়র গোয়েন্দা অফিসারকে নিয়ে হাসিনাকে হিন্দন বিমান ঘাঁটিতে পৌঁছানোর অপারেশন প্রণয়ন করেন। এই অপারেশনে আরো যুক্ত ছিলেন ভারতের বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল বি আর চৌধুরী, আর্মি চিফ জেনারেল উপেন্দ্র ত্রিবেদি, ইন্টিগ্রেটেড ডিফেন্স স্টাফ লে. জে. জনসন ফিলিপ ম্যাথিউ। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ এই ৪ জন ছাড়া এই পরিকল্পনার কথা কোনো পঞ্চম ব্যক্তি জানতেন না। অবশ্য এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শংকরকে নির্দেশ দেন যে, যে কোনো মূল্যে হাসিনাকে নিরাপদে ভারতে আনতে হবে। এই অপারেশনের কোড নেম ছিল ‘এজেএএক্স ১৪৩১’। শেখ হাসিনাকে বহনকারী পরিবহন বিমান সি-১৩০জে যখন আকাশে উড্ডয়ন করে তখন থেকে শেখ হাসিনার বিমানকে পাহারা দিয়ে হিন্দন বিমান ঘাঁটি পর্যন্ত নিয়ে আসে ভারতীয় বিমান বাহিনীর সর্বাধুনিক দুটি জঙ্গি বিমান ফরাসি র‌্যাফেল।

হাসিমারা বিমান ঘাঁটি থেকে ভারতীয় বিমান বাহিনীর জঙ্গি বিমানের ১০১ নং স্কোয়াড্রন থেকে বিহার ও ঝাড়খন্ড সীমানা দিয়ে হাসিনার বিমানের রুট ঠিক করে দেওয়া হয়। ভারতের সব মিডিয়ার কাছে হাসিনার এই বিমানের গতিপথ গোপন রাখা হয়। ভারত সরকার আশঙ্কা করছিল যে, যে কোনো সময় আকাশ পথে শেখ হাসিনার বিমান আক্রান্ত হতে পারে। তাই ১০১ নং স্কোয়াড্রন জঙ্গি বিমান মধ্য আকাশে যে কোনো আক্রমণ মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত ছিল। ভারতীয় সময় ৫টা ৪৫ মিনিটে উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদ বিমান ঘাঁটিতে হাসিনার পরিবহন বিমান অবতরণ করে।

গাজিয়াবাদ বিমান ঘাঁটিতে হাসিনার বিমান অবতরণের পূর্বেই সমগ্র বিমান ঘাঁটি চার দিক দিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী ঘিরে রেখেছিল। হাসিনা বিমান থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে ভারতের জেমস বন্ড নামে খ্যাত নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল তার সাথে বিমান ঘাঁটির একটি কক্ষে ১ ঘণ্টা গোপন সলাপরামর্শ করেন।

ওপরের এই দুটি রুদ্ধশ্বাস কাহিনী থেকে বোঝা যায় যে, ভারতের কাছে এখন পর্যন্ত শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের কোনো বিকল্প নাই। তাই যে কোনো মূল্যে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থান ভন্ডুল করে দেওয়ার জন্য ভারতীয় মদদপুষ্ট বৈরী শক্তি ৬ আগস্ট রাতে ক্ষমতার দূর্গে ষড়যন্ত্র পাকাতে থাকে। কিন্তু মধ্যরাতের পর ঐ ষড়যন্ত্র অঙ্কুরেই বিনষ্ট করা হয়।

আলোচ্য ষড়যন্ত্র অঙ্কুরেই বিনষ্ট হওয়ায় ভারত মরিয়া হয়ে শেষ প্রচেষ্টা চালায়। এটি ছিল ভয়ঙ্কর একটি পরিকল্পনা, যেটি জুডিশিয়াল ক্যু প্রচেষ্টা নামে কুখ্যাতি অর্জন করেছে।

তাই বলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র নেতৃবৃন্দ, ড. ইউনূসের সরকার, বিএনপি ও জামায়াতসহ রাজনৈতিক দলসমূহের আত্মতুষ্টির কোনো কারণ নাই। ইউনূসের সরকারকে উৎখাতের জন্য দেশের বাইরে এবং ভেতরে নানামুখী তৎপরতা চলছে। শেখ হাসিনা সাময়িক আশ্রয় চেয়েছিলেন বলে ভারত তাকে তাদের দেশে অবতরণের সুযোগ দিয়েছিল, এই কথা বলেছেন তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শংকর। তারপর ২২ দিন অতিক্রান্ত হয়েছে। এখন শেখ হাসিনা ডিপ্লোম্যাটিক পাসপোর্ট হোল্ডার- এই আইনের মারপ্যাঁচ তুলে তাকে আরো ১ মাস ভারতে রাখার যুক্তি দেখানো হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের সমস্ত এমপি মন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর লাল পাসপোর্ট বা ডিপ্লোম্যাটিক পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে।

এই লেখার সময় পর্যন্ত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৫০টির বেশি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভারত সম্ভবত বুঝতে পারছে যে, শেখ হাসিনার আর বাংলাদেশে ফেরার কোনো সম্ভাবনা নাই। গত ১৫ আগস্ট শোক দিবসের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির যে অপচেষ্টা করা হয়েছিল, সেটিও নিদারুণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ, শেখ হাসিনা শোক দিবসে ১০ লক্ষ লোক সমবেত করার নির্দেশ দিলেও শেখ মুজিবের বাড়িতে ১৫ আগস্ট প্রত্যুষে ২৫/৩০ জনের বেশি লোক জমায়েত হয়নি।

মিছিল-মিটিং দিয়ে ভারত আওয়ামী লীগের মাধ্যমে কোনো গোলমাল সৃষ্টি করতে পারবে না। তাই ভারত পাওয়ার সেন্টারগুলোতে ষড়যন্ত্রের বীজ বপনে ব্যস্ত থাকবে। সুতরাং আওয়ামী ও ভারত বিরোধী শক্তিসমূহকে সব সময় অতন্দ্র প্রহরীর ন্যায় সজাগ থাকতে হবে।

সূত্র : দৈনিক ইনকিলাব