প্রচ্ছদ জাতীয় শিগগির বিএনপির কমিটি ঘোষণা, আলোচনায় যারা

শিগগির বিএনপির কমিটি ঘোষণা, আলোচনায় যারা

শিগগির দলের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার নতুন কমিটি দেবে বিএনপি। বিগত কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর এরই মধ্যে বেশ কিছু দিন অতিবাহিত হয়েছে। কারা নতুন কমিটিতে জায়গা পাচ্ছেন তা নিয়ে চলছে যাচাই-বাছাই। দল এবং নেতাকর্মীদের কাছে যারা পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি (ক্লিন ইমেজ) হিসেবে পরিচিত, তাদেরই নতুন কমিটিতে প্রাধান্য দেয়া হবে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের মহানগর উত্তরে এরই মধ্যে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের মধ্য থেকেই নেতৃত্ব আসতে পারে।

জানা গেছে, শিগগির উত্তরে নতুন আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। মহানগর উত্তরে নতুন কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিএনপিতে নানামুখী তৎপরতা, তদবির, জল্পনা-কল্পনা চলছে। দলের ঢাকা মহানগরকেন্দ্রিক রাজনীতিতে যারা সক্রিয়, তারা নিজ নিজ বলয় থেকে নেতৃত্ব উঠিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তারা। একই সঙ্গে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও তার নিজস্ব চ্যানেলে যোগ্য ও ক্লিন ইমেজের নেতৃত্বের ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছেন। বিশেষ করে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই, দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয় এমন নেতাদের নেতৃত্বে আনতে কাজ করছেন।

বিএনপির দায়িত্বশীল কয়েকজন নেতা জানান, তারেক রহমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে চান। এ বিষয়টি মাথায় রেখে সম্পূর্ণ ক্লিন ইমেজের নেতাদের দিয়ে মহানগর উত্তর বিএনপির নতুন কমিটি গঠন করতে চান তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহানগর উত্তরের নতুন কমিটিতে যাদের নাম আলোচনায় রয়েছেন তারা হচ্ছেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল এবং বিলুপ্ত কমিটির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এম কফিল উদ্দিন।

এ বিষয়ে আমিনুল হক বলেন, মহানগর উত্তরে একজন বিএনপির কর্মী হয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই কাজ করছি। সদস্য সচিবের দায়িত্বও পালন করেছি। সব সময় চেষ্টা করেছি সুখে-দুঃখে নেতাকর্মীদের পাশে থাকতে। সততার সঙ্গে কাজ করেছি। দল যদি মনে করে আমি যোগ্য এবং দায়িত্ব দেয় তাহলে শতভাগ নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করব। এ ক্ষেত্রে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাকেই স্বাগত জানাব।

এম কফিল উদ্দিন জানান, মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। দলের প্রয়োজনে যে দায়িত্ব দেয়া হবে তা নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে পালন করবো। অতীতেও দলের প্রয়োজনে হাইকমান্ড যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে, তা সবসময় সততার সঙ্গে পালন করার চেষ্টা করেছি এবং আজীবন করে যাব। আশা করি বিগত সময়ের মতো এবারও দলের শীর্ষনেতা সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন।

এদিকে নতুন কমিটির বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যাকে উপযুক্ত মনে করবেন তাকেই দায়িত্ব দেবেনে।

জানা যায়, মাত্র আড়াই মাসের ব্যবধানে গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে দলের ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করে বিএনপি। গত ৭ জুলাই সাইফুল আলম নিরবকে আহ্বায়ক ও আমিনুল হককে সদস্য সচিব করে দুই সদস্যের একটি আংশিক কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে কমিটি ভেঙে দেয়া হয়।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিশৃঙ্খলা রোধ এবং সাংগঠনিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ গ্রহণ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সারা দেশে দল ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের ৩ শতাধিক নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়। কয়েকটি জেলা কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির কমিটিও বিলুপ্ত করে হাইকমান্ড।

সংগঠনকে গতিশীল এবং নেতৃত্বের বিকাশে ২০১৭ সালের এপ্রিলে ঢাকা মহানগর বিএনপিকে দুই ভাগে ভাগ করে কমিটি দেয়া হয়। উত্তরে এমএ কাইয়ূমকে সভাপতি এবং আহসানউল্লাহ হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এরপর ২০২১ সালের আগস্টে আমানউল্লাহ আমানকে আহ্বায়ক ও আমিনুল হককে সদস্য সচিব করে উত্তর বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়।

বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নেতৃত্বের জন্য অনেক নেতাই আলোচনায় থাকলেও ‘ক্লিন ইমেজের’ ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিশেষ করে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই এবং দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয় এমন নেতাদের নেতৃত্বে আনতে কাজ করছেন দলের হাইকমান্ড।