প্রচ্ছদ জাতীয় ‘শিক্ষার্থীদের দাবির মুখেও টিকে গেলেন রাষ্ট্রপতি!’

‘শিক্ষার্থীদের দাবির মুখেও টিকে গেলেন রাষ্ট্রপতি!’

‘শিক্ষার্থীদের দাবির মুখেও টিকে গেলেন রাষ্ট্রপতি!’-এটি দৈনিক সমকালের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, পদ ছাড়ার চাপ থাকলেও রাজনৈতিক দলগুলোর মতানৈক্যে আপাতত বঙ্গভবন ছাড়তে হচ্ছে না রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনকে! যদিও তাঁকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ এখনও প্রশমন হয়নি। রাষ্ট্রপতি প্রশ্নে বেশ অস্বস্তিতে রয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারও। গতকাল বুধবার দুপুরে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় গিয়ে ড. ইউনুসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে।

বিএনপি এ মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির অপসারণ নিয়ে ‘নতুন সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক জটিলতা’ সৃষ্টির বিপক্ষে দলীয় অবস্থানের কথা প্রধান উপদেষ্টাকে জানায়। তবে সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বিএনপির এই অবস্থান প্রত্যাখ্যান করে পাঁচ দফা দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি পদে মোঃ সাহাবুদ্দিন কত সময় টিকতে পারবেন, তা নিয়ে এখনই নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে
না।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মোঃ সাহাবুদ্দিনকে বাদ দিয়ে রাষ্ট্রপতি পদে নতুন মুখ খুঁজতে সরকারের তরফ থেকে নানামুখী তৎপরতা চালানো হয়েছিল। ছাত্রনেতারা ড. ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি পদে আনতে চাইলেও সরকারের পক্ষ থেকে বিকল্প ব্যক্তিরও সন্ধান করা হয়। এমনকি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের কাছে রাষ্ট্রপতি হওয়ার প্রস্তাব করা হলেও তিনি রাজি হননি বলে খবর বেরিয়েছে। এ ছাড়া নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে একাধিক গ্রহণযোগ্য সাবেক প্রধান বিচারপতির নাম নিয়ে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন আছে।

সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এখন দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তিনি দেশে ফেরার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এ বিষয়ে আবারও আলোচনা হতে পারে। সেখানে আসতে পারে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় রাষ্ট্রীয় সফর শেষে আগামীকাল শুক্রবার তাঁর দেশে ফেরার কথা রয়েছে। মোঃ সাহাবুদ্দিনকে ‘পদত্যাগে বাধ্য করা বা অপসারণের জন্য নতুন পদক্ষেপে’ বিএনপি রাখঢাক না রেখেই তার অবস্থান জানিয়েছে। রাষ্ট্রপতি পদে থাকার অধিকার হারিয়েছে মত দিলেও তাঁর পদত্যাগ প্রশ্নে জামায়াতে ইসলামীর জোরালো দাবি নেই। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসনের (ইমপিচমেন্ট) মাধ্যমে অপসারণ করতে অবশ্যই সংসদ লাগবে। দ্বাদশ সংসদ বিলুপ্তির কারণে সেটি সম্ভব নয়। রাষ্ট্রপতিকে অপসারণে ভিন্ন কোনো পদ্ধতির বিষয়ে নির্দেশনা বিদ্যমান সংবিধানে নেই। সংবিধানের আলোকে মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ করতে হলেও স্পিকারকে প্রয়োজন। কিন্তু ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর পদত্যাগে স্পিকারের পদটিও এখন শূন্য। এ ক্ষেত্রে তিনি কার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন, সেটিও অস্পষ্ট।

যদিও গতকাল দুপুরে সচিবালয়ের নিজ দপ্তরে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘রাষ্ট্রপতি থাকবেন কি থাকবেন না- প্রশ্নটি এ মুহূর্তে বাংলাদেশে কোনো আইনি বা সাংবিধানিক প্রশ্ন নয়। এটি একেবারেই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।’ সরকার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছে জানিয়ে তিনি সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রথম আলো

দৈনিক প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর ‘রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে অপসারণে চাপ, সরকারও চাপে’। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনের থাকা না-থাকার প্রশ্নে সংকট তৈরি হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তিনি বঙ্গভবনে থাকবেন নাকি পদত্যাগ করবেন, নাকি অপসারণ করা হবে—এ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে অন্যতম প্রধান দল বিএনপি এ মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চায় না। দলটি মনে করে, রাষ্ট্রপতি পদে শূন্যতা হলে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট তৈরি হবে।

আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এ বৈঠকে রাষ্ট্রপতির বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে একাধিক উপদেষ্টা জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হতে পারে, এমন আলোচনাও রয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।

তবে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম গতকাল বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘রাষ্ট্রপতি থাকবেন কি থাকবেন না, প্রশ্নটি এ মুহূর্তে বাংলাদেশে কোনো আইনি বা সাংবিধানিক প্রশ্ন নয়। এটা একেবারেই একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।’ তিনি বলেন, সরকার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছে। তিনি সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।

গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হয়। গভীর রাতে ইনকিলাব মঞ্চের ব্যানারে বঙ্গভবনের সামনেও বিক্ষোভ দেখানো হয়। গতকালও দিনের বিভিন্ন সময় কয়েকজনকে বঙ্গভবনের কাছে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। তবে বঙ্গভবনের সামনের রাস্তায় গতকাল সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‍্যাব ও পুলিশের অতিরিক্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল চোখে পড়ার মতো।

যুগান্তর

দৈনিক যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ’। খবরে বলা হয়, আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। হত্যা, নির্যাতন, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ ও জননিরাপত্তা বিঘ্নসহ নানা অপরাধের দায়ে এই সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়। বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবি ওঠে। সর্বশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটিসহ বিভিন্ন সংগঠনের দাবির মুখে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৭৬ বছরে পা দিয়েছে সংগঠনটি।

রাষ্ট্রপতির আদেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করে গত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নসহ নানাবিধ জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। এ সংক্রান্ত প্রামাণ্য তথ্য দেশের সব প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতাকর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণিত হয়েছে।’

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ‘যেহেতু ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ জনগণকে উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ করে শত শত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিকে হত্যা এবং আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে। এসব কারণে সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ আছে যে, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। এ কারণে সরকার ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯’-এর ধারা ১৮-এর উপধারা(১)-প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এ আইনের তফশিল-২ এ ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ নামীয় ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হলো।’

কালের কণ্ঠ

‘শেখ হাসিনাদের মৃত্যুদণ্ড চায় না এইচআরডব্লিউ’-এটি দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ গণহত্যার অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ড চায় না নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে লেখা চিঠিতে এইচআরডব্লিউ এশিয়া বিভাগের উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি এ প্রত্যাশার কথা জানান।

এর আগে ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সীমাবদ্ধতা ও সমালোচনার কথা চিঠিতে তুলে ধরেছে এইচআরডব্লিউ। অতীতের সেই অভিজ্ঞতার আলোকে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সংঘটিত অপরাধের বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর আগেই মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিলসহ ট্রাইব্যুনালের আইন সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছে এইচআরডব্লিউ।

চিঠিতে সংস্থাটি আরো বলেছে, শেখ হাসিনাসহ আরো অনেকে ভারতসহ বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। মৃত্যুদণ্ডব্যবস্থা বিলোপ এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে চললে ভারতসহ অন্য দেশগুলোর উচিত বাংলাদেশে বিচারপ্রক্রিয়াকে সমর্থন জানানো এবং প্রত্যর্পণ চুক্তি মেনে চলা।

এইচআরডব্লিউয়ের এশিয়াবিষয়ক গবেষক জুলিয়া ব্লেকনার গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘জুলাই ও আগস্টের প্রতিবাদ-বিক্ষোভের সময় ব্যাপক নিপীড়নের জন্য সে সময় আদেশ দেওয়ার দায়িত্বে থাকা শেখ হাসিনাসহ অন্যদের ভূমিকা তদন্ত করা উচিত।

ইত্তেফাক

দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম পাতার প্রতিবেদন ‘সচিবালয়ে ঢুকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, আটক অর্ধশতাধিক’। খবরে বলা হয়, ‘বৈষম্যহীন’ এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলের দাবিতে এবার সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে গতকাল বিক্ষোভ করেছেন অকৃতকার্য একদল শিক্ষার্থী। পরে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ধাওয়া, লাঠিপেটা করে সচিবালয় এলাকা থেকে সরিয়ে দেয়। সেখান থেকে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে আটকও করা হয়েছে।

পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে বুধবার বেলা ২টা ৫০ মিনিটের দিকে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী সচিবালয়ে ঢুকে পড়েন। তারা সেখানে ‘আমার সোনার বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘মুগ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘তুমি কে আমি কে ছাত্র-ছাত্র’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম-সংগ্রাম’ ইত্যাদি শ্লোগান দেন। এতে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তখন আন্দোলরত শিক্ষার্থীদের শ্লোগান বন্ধ করে শান্তিপূর্ণ আলোচনার আহ্বান জানান সচিবালয়ে দায়িত্বরত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

ঘোষিত ফলাফল বাতিল ও পুনরায় মূল্যায়নের দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, তারা এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পরীক্ষার বৈষম্যহীন ফলাফল চান। ফল পুনর্মূল্যায়ন ও ফলাফলের ত্রুটি সংশোধনের দাবিতে তাদের এই কর্মসূচি। পাশাপাশি বিভিন্ন বোর্ডে তাদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তার বিচার চান। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা এখানে অবস্থান করবেন। একপর্যায়ে বিকাল ৪টার দিকে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয় এবং লাঠিচার্জ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এতে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। যে যার মতো পালিয়ে যান। আর কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ।

বিকাল সোয়া ৪টার দিকে সচিবালয়ে দায়িত্বরত পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, এই ঘটনায় আটককৃতের সংখ্যা ৫৩ জন। আটককৃতদের বেলা সাড়ে ৪টার দিকে দুটি প্রিজনভ্যানে করে সচিবালয়ের ভেতর থেকে নিয়ে যেতে দেখা যায়। জানা গেছে, আটক শিক্ষার্থীদের থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

নয়া দিগন্ত

দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রথম পাতার খবর ‘হজযাত্রী নিবন্ধনে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আহ্বানের পরও গতি ফেরেনি’। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালের হজের প্রাথমিক নিবন্ধন শুরু হয়েছে ১ সেপ্টেম্বর থেকে। এবার হজযাত্রীর কোটা রয়েছে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের। কিন্তু প্রায় দুই মাস ধরে নিবন্ধন করেছেন মাত্র সাড়ে সাত হাজার জন। এ ছাড়া কাক্সিক্ষত জোনে তাঁবু বরাদ্দ পেতে ধর্ম মন্ত্রণালয় ২৩ অক্টোবরের মধ্যে তিন লাখ টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধনের আহ্বান জানানোর পরও নিবন্ধনে গতি বাড়েনি।

জানা যায়, গত ২৫ আগস্ট ধর্ম মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে ১ সেপ্টেম্বর থেকে হজের প্রাথমিক নিবন্ধন শুরুর ঘোষণা দেয়। এতে জানানো হয়, একটানা তিন মাস ধরে চলবে এ নিবন্ধন। ৩০ নভেম্বর শেষ হবে নিবন্ধন কার্যক্রম। এরপর আর সময় বাড়ানো হবে না বলেও ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এবার নিবন্ধন করতে একবারে তিন লাখ টাকা জমা দিতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে কাক্সিক্ষত জোনে তাঁবু বরাদ্দ পেতে ২৩ অক্টোবরের মধ্যে নিবন্ধন করতে বিশেষ তাগাদা দেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত মাত্র ৭৬৭৯ জন নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যেতে ২৪৯৯ জন এবং বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে যেতে নিবন্ধন করেছেন ৫১৮০ জন। ফলে এখনো নিবন্ধন করতে বাকি রয়েছেন এক লাখ ১৯ হাজার ৫১৯ জনের। তবে এখনো ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধন অব্যাহত থাকবে। এ সময়ের মধ্যে নিবন্ধনসম্পন্ন করার জন্য গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে ধর্ম মন্ত্রণালয় আবারো হজযাত্রীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।

এ দিকে আগামী ৩০ অক্টোবর হজ প্যাকেজ ঘোষণা করবে সরকার। ওই দিন হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভায় প্যাকেজ চূড়ান্ত হবে। হজ প্যাকেজ মূল্যের অবশিষ্ট টাকা প্যাকেজে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। এ বছরের হজ প্যাকেজ মূল্য সৌদি পর্বের ব্যয় ও বিমান ভাড়া নির্ধারণ সাপেক্ষে ঘোষণা করা হবে। আগামী বছরের হজের খরচ কমানোর চেষ্টা চলছে বলেও জানা যায়।

বণিক বার্তা

দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান খবর ‘রিজার্ভের পতনে বিদেশী বিনিয়োগে ভাটা নামে’। খবরে বলা হয়, কভিডের সময় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশে গ্রস বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৪৩ বিলিয়ন ডলার। এর পরের বছর ডিসেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৬ বিলিয়ন ডলারে। কভিডের অভিঘাত পার করে যে সময় অর্থনীতির পুনরুদ্ধার জোরালো হয়ে ওঠার কথা, ঠিক সে সময়েই দেশের রিজার্ভে পতন শুরু হয়। ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ তা নেমে আসে ২৭ দশমিক ১৩ বিলিয়নে। তবে সে সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের এ হিসাবায়ন পদ্ধতি আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। ক্রমাগত রিজার্ভ কমতে থাকায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দ্বারস্থ বাংলাদেশ সংস্থাটির শর্ত অনুযায়ী গত বছরের জুলাই থেকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বিপিএম৬ পদ্ধতিতে এর হিসাবায়ন শুরু করে।

এ পদ্ধতি অনুযায়ী ২০২৩ সাল শেষে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার। রিজার্ভ পতনের এ পুরো সময়ে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের (এফডিআই) প্রবাহও ছিল নিম্নমুখী ধারায়।

বিষয় দুটি একে অন্যের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত উল্লেখ করে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রিজার্ভের পতন যখন শুরু হয়েছে তখন থেকেই দেশের বিদেশী বিনিয়োগ নিম্নমুখী। সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা না ফিরলে ও রিজার্ভ পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগ আসবে না।

ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করে বিনিয়োগকারী বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর বাংলাদেশে নিয়ে আসা অর্থসংক্রান্ত জরিপের ভিত্তিতে এফডিআই প্রবাহের পরিসংখ্যান ও গতিপ্রকৃতির তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক্ষেত্রে নতুন মূলধন (ইকুইটি ক্যাপিটাল), পুনর্বিনিয়োগকৃত আয় (রিইনভেস্টেড আর্নিংস) ও আন্তঃপ্রতিষ্ঠান ঋণ (ইন্ট্রাকোম্পানি লোন) এ তিন ভাগে এফডিআই প্রবাহ হিসাব করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দেশে পুনর্বিনিয়োগকৃত আয় ও আন্তঃপ্রতিষ্ঠান ঋণ ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। কিন্তু নতুন মূলধন বা বিনিয়োগ দেশে আসছে না।

আজকের পত্রিকা

দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রথম পাতার খবর ‘রাষ্ট্রপতির অপসারণ নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতা’। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতির পদ থেকে মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণের দাবি উঠলেও এ নিয়ে গতকাল বুধবার পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি অন্তর্বর্তী সরকার। অবস্থানও স্পষ্ট করেনি। সূত্র বলেছে, এই ইস্যুতে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সমর্থন না পাওয়ায় সরকার সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছে।

বিএনপির নেতারা গতকাল স্পষ্টই বলেছেন, এখন রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করা হলে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি হবে। নির্বাচনও বিলম্বিত হবে। সন্ধ্যায় দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও এ মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের বিষয়ে একই অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টা বলেছেন, রাষ্ট্রপতির থাকা না থাকা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। ফলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে রাজনৈতিক সমঝোতায়।

অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক সূত্র বলেছে, রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের বিষয়ে গতকাল বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টাসহ কয়েকজন উপদেষ্টার একাধিক আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক বৈঠক এবং আলাপ-আলোচনা হয়েছে। বড় রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তেমন সমর্থন পাওয়া যায়নি; বরং তাঁরা বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করা হলে দেশে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট দেখা দেবে। রাষ্ট্র সংস্কার ও জাতীয়

সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত হতে পারে। কোনো কোনো রাজনৈতিক দল এই উদ্যোগের পেছনে ষড়যন্ত্রের আশঙ্কাও প্রকাশ করেছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পতন ঘটে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের। তিনি দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। পরে এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি জানিয়েছিলেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন। তবে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র তিনি পাননি। রাষ্ট্রপতির বক্তব্যকে কেন্দ্র করে গত সোমবার তাঁর বিরুদ্ধে শপথ ভঙ্গের অভিযোগ আনেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

পরদিন মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব বলেন, আইন উপদেষ্টার বক্তব্যের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার একমত। আইন উপদেষ্টা ও তথ্য উপদেষ্টা দুপুরে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। একই দিন বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলতি সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবি জানায়।

একই দাবিতে সংগঠনটি দেশের বিভিন্ন স্থানেও সমাবেশ ও বিক্ষোভ করে। দুপুরের পর রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করে কয়েকটি সংগঠন। কয়েক শ বিক্ষোভকারীর মধ্যে একাংশ রাত আটটার দিকে নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন। পরে সেনাসদস্যরা পরিস্থিতি শান্ত করেন। রাত দুইটার দিকে বিক্ষোভকারীরা বঙ্গভবনের সামনের সড়ক ছেড়ে যায়।

ডেইলি স্টার

দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান শিরোনাম ‘Chhatra League banned’ অর্থাৎ ‘ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ’। প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের দাবির মধ্যে বুধবার রাতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সন্ত্রাসবিরোধী আইন-২০০৯-এর ১৮ (১) ধারা অনুযায়ী সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।

এই সপ্তাহের মধ্যে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ না হলে রাজপথে নামবে বলে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা সরকারকে আলটিমেটাম দেয়ার একদিন পর এই পদক্ষেপ নেয়া হল। নিষেধাজ্ঞার খবরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভরত কয়েকশ শিক্ষার্থী উল্লাস প্রকাশ করেন।

দেশ রূপান্তর

‘সাংবিধানিক শূন্যতার শঙ্কা বিএনপির’-এটি দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র ইস্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের মন্তব্যের পর তাকে অপসারণের দাবিকে সন্দেহের চোখে দেখছে বিএনপি। দলের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, যে প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রপতিকে সরানোর কথা বলা হচ্ছে তাতে সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি হতে পারে। রাষ্ট্রপতিকে সরানো অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ দীর্ঘায়িত করার প্রক্রিয়া কি না, এমন সন্দেহ করছে দলটি।

ফলে কোনোভাবেই দেশে কোনো নতুন করে সাংবিধানিক কিংবা রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে বিএনপি গুরুত্ব দিচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের ভার্চুয়াল বৈঠকে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি ওঠার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার দলটির স্থায়ী কমিটির তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

বিএনপির সূত্রে জানা গেছে, প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে বিএনপির অবস্থান প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেছেন। রাষ্ট্রপতির অপসারণ নিয়ে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট হওয়ার পর এখন এই প্রক্রিয়া কতদূর অগ্রসর হয় তা পর্যবেক্ষণ করবে দলটি।

দলটি রাষ্ট্রপতির অপসারণের দাবিকে ‘স্পর্শকাতর’ বিষয় হিসেবে দেখছে। যে কারণে গতকাল সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। এ প্রতিবেদন লেখার সময় বৈঠক চলছিল।