বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করা হয়। সুতরাং এখন থেকে সংগঠনটি আর কোনো রাজনৈকি কর্মকাণ্ড করতে পারবে না।
এমনকি সংগঠনটিকে কেউ সমর্থন করলেও আইনের ধারায় তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
সন্ত্রাসবিরোধী আইন-২০০৯ এর আলোকে কোনো নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনকে সমর্থন দিলে ৭ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। এই আইনে ধারা ৮ অনুযায়ী, কেউ ছাত্রলীগের সদস্য হলে ৬ মাসের জেল হবে। ধারা ৯ অনুযায়ী ছাত্রলীগের ব্যাপারে সহমর্মিতা/সমর্থন চাইলে ৭ বছরের জেল এবং ধারা ১৭ অনুযায়ী ছাত্রলীগের কাউকে আশ্রয় দিলে তা সন্ত্রাসী কার্যক্রম হিসেবে গণ্য হবে এবং ধারা ১৪ অনুযায়ী তার ৩-৫ বছর সাজা হবে।
ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করে গত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নসহ নানা ধরনের জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল এবং এ সম্পর্কিত প্রামাণ্য তথ্য দেশের সব প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতাকর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণিত হয়েছে। গত ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনগণকে উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ করে শতশত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিকে হত্যা করেছে এবং আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে।
সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে যে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কাজে জড়িত আছে।
এই অবস্থায় সরকার `সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯` এর ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন `বাংলাদেশ ছাত্রলীগ`কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল এবং ওই আইনের তফসিল-২ এ `বাংলাদেশ ছাত্রলীগ` নামীয় ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসেবে তালিকাভুক্ত করল বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।