
দীর্ঘ ৯ বছর পর জামিনে সোমবার কারাগার থেকে ছাড়া পান মাদারীপুরের হাফেজ কাজী খালেদ সাইফুল্লাহ জামিল। কিন্তু জেল গেট থেকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এ আসামিকে পুলিশ পরিচয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছে পরিবার।
মঙ্গলবার সকালে মাদারীপুর নতুন শহর এলাকায় ইমাম মুয়াজ্জিন সমাজকল্যাণ পরিষদ ও হেফাজতে ইসলাম মাদারীপুর জেলা শাখার ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনে জামিলের সন্ধান দাবি করা হয়।
তবে গতকাল বিকেলে জামিলকে নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে আইনজীবীর বরাত দিয়ে জানিয়েছেন তাঁর মা নাজমা বেগম। তিনি জানান, সোমবার জামিলকে কাশিমপুর জেল গেটে আনতে যান তাঁর ছোট ভাই ও মামা। জেল কর্তৃপক্ষ জানায়, জামিন স্থগিত হওয়ায় জামিলকে ছাড়া হবে না। পরে আইনজীবী নাহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জামিলকে একটি কালো গাড়িতে তুলে নিয়ে গেছে পুলিশের বিশেষ শাখা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের লোক।
নাজমা বেগম বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলন করার পরে বিকেলে খবর পেয়েছি জামিলকে নতুন একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে আবারও কারাগারে নেওয়া হয়েছে। এত বছর জেল খাটার পরেও ছেলে আমার নতুন কোন অপরাধে জড়ালো? আমি আমার ছেলের মুক্তি চাই।’
সংবাদ সম্মেলনে জামিলের মামা অধ্যাপক কাজী মো. মহসিন জানান, ১৬ বছর বয়সের সময় ২০১৬ সালে হাফেজ কাজি খালেদ সাইফুল্লাহ জামিলকে জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর সোমবার বিকেলে কাশিমপুর ১ নম্বর কারাগার থেকে বের হলে তাঁকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় একটি দল। পরিচয় জানতে চাইলে তারা সিটিটিসি ইউনিটের লোক দাবি করেন। তারা অমানবিক ও বর্বতার অবসান চান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলাম মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি আলী আহমেদ চৌধুরী, ইমাম মুয়াজ্জিন সমাজকল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল আলম খানসহ পরিবারের সদস্যরা।
২০১৬ সালের জুনে মাদারীপুর সদরের দুধখালী ইউনিয়নের বলসা গ্রাম থেকে নিখোঁজ হন কিশোর জামিল। তিন দিন পর ঢাকার মাতুয়াইলের বাদশা মিয়া রোড থেকে তাঁকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ। জামিল শিবচরের জামিয়াতুস সুন্নাহ মাদ্রাসার ছাত্র। তাঁর প্রয়াত বাবা মাদারীপুর সরকারি কলেজের (নাজিমউদ্দিন কলেজ) গণিত বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান কাজী বেলায়েত হোসেন।
সূত্র: সমকাল