শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ। পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনও। তবে নির্ধারিত সময়ের আগেই ছাত্র-জনতা সেই এলাকায় অবস্থান নিলেও দেখা মিলেনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকজন ওই এলাকায় এসে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে খেয়েছেন গণপিটুনি।
রোববার (১০ নভেম্বর) সরেজমিনে জিরো পয়েন্ট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেই এলাকা দখলে রয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের। তবে সেখানে দেখা মেলেনি আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীর।
এদিকে নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে বেলা তিনটার কিছুক্ষণ আগেও কর্মসূচির ব্যাপারে দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেখানে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলা হয়, কেউ সকাল থেকেই জিরো পয়েন্টে যেয়ে বসে থাকবেন না; আশেপাশে থাকবেন, যাতে ৫/১০ মিনিটে হেঁটেই জিরো পয়েন্ট, নূর হোসেন চত্বর পৌঁছাতে পারেন। ঠিক ৩টায় আমাদের কর্মসূচি, সবাই ৩টায় একই সাথে জয় বাংলা স্লোগানে প্রকম্পিত করে তুলবেন জিরো পয়েন্ট, নূর হোসেন চত্বর।
তবে দলের সেই নির্দেশনা পালন করেননি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ছাত্র-জনতার ভয়ে সেই এলাকায় আসেননি কেউ।
বেলা তিনটার পর আওয়ামী লীগের পেইজ থেকে বলা হয়, স্বৈরাচারী আচরণ হলো জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করা। মিছিল বা সমাবেশ আমাদের নিজেদের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা। একে বন্ধ করতে চাওয়ার মানে শুধু স্বৈরাচারের পক্ষে দাঁড়ানো নয়, গণতন্ত্রের মৃত্যুদণ্ড দেওয়াও।|
গত শুক্রবার নিজেদের ফেসবুক পেইজে আওয়ামী লীগ ঘোষণা দেয়- রোববার বিকেল তিনটায় শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে রাজধানীর জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভ করবে তারা৷ ফেসবুকে ছড়ানো হয়, বিভিন্ন জেলা থেকে আওয়ামী লীগের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ঢাকামুখী হচ্ছেন। এতে তৈরি হয় রাজনৈতিক অস্থিরতা। একই সঙ্গে জনমনেও ভীতি তৈরি হয়।
আওয়ামী লীগের এমন ঘোষণার পর পাল্টা কর্মসূচি দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তারা বেলা ১২টা থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে জিরো পয়েন্ট এলাকায়। ঘোষণা অনুযায়ী, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেইটে তৈরি করা হয় অস্থায়ী মঞ্চ। মঞ্চের সামনে ১২টা নাগাদই উপস্থিত হন কয়েক হাজার ছাত্র-জনতা। ছাত্র-জনতার অবস্থান দখলে নেয় পুরো জিরো পয়েন্ট।
এদিকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে অবস্থিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মী। এছাড়া গুলিস্তান এলাকায় দেখা গেছে- লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের।
এদিন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে আওয়ামী লীগের ১২ জন নেতাকর্মীকে গুলিস্তান এলাকায় আসতে দেখা যায়৷ তাদের মধ্যে নয়জন পুরুষ গণপিটুনির শিকার হন। মারধরের পর তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এছাড়া বাকি তিনজন ছিলেন নারী। তারা বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এলাকায় এসে আবার চলে যান।
সূত্র: ঢাকামেইল