নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায় স্থানীয় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে এক হতদরিদ্র কৃষক ও তার স্ত্রীকে মেরে দাঁত ভেঙে ফেলাসহ পরিবারের সদস্যদের মারধর করে জমির ধান কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
মামলা করার জেরে উপজেলার বড়চাপা ইউনিয়নের বড়চাপা নামাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, ৬ বছর আগে কৃষক রহিজ উদ্দিনের বড় মেয়েকে একই এলাকার নুরুল হক নুরুর ছেলে নাজমুল ধর্ষণের চেষ্টা করে। পরে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে নরসিংদী আদালতে একটি মামলা করেন। মামলার পর থেকে বিবাদী পক্ষ মামলা তুলে নিতে হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘তারা আমার দাঁত ভেঙে দিয়েছে। বাড়িতে এসে ছোট মেয়েকে তুলে নিয়ে যেতে চায়। এখন তাদের জোর বেশি। আমাদের ফসলি জমির ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছে।’ ভুক্তভোগী নারীর ছোট মেয়ে বলেন, ‘প্রায় ৬ বছর আগে তার বড় বোনকে নাজমুল হোসেন ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলছে। তার বিরুদ্ধে মামলা করে আমরা অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। এরপর গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিএনপি নেতা রিপন, তার ভাই শাজাহান ও নাজমুল দলবল নিয়ে আমাদের বাড়িতে আবার হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এরপর শনিবার (৯ নভেম্বর) সকালে রিপন দলবল নিয়ে আমাদের জমির পাকা ধান কেটে নেওয়া শুরু করে।’
বর্তমানে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় জীবনযাপন করছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসনসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহযোগিতা কামনা করে ভুক্তভোগী কৃষক রহিজ উদ্দিন বলেন, ‘আমি ধান কাটার খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন ও মনোহরদী থানার পুলিশের সহযোগিতায় বাধা দিই। পরে পুলিশ চলে গেলে একই এলাকার আবদুল মজিদ লাল মিয়ার ছেলে কাননের সহযোগিতায় বিএনপি নেতা রিপন আবার আমাদের মারধর করে জমির ধান কেটে নিয়ে যায়।’
এ বিষয়ে অভিযুক্তের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ধান কাটার শ্রমিকরা জানান, তাদের মজুরির বিনিময়ে আনা হয়েছে। কার জমি তারা জানেন না। পুলিশ চলে যাওয়ার পর ধান বাড়িতে পৌঁছে দিতে রিপন তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
মনোহরদী থানার উপপরিদর্শক হাবিবুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘বিএনপি নেতা রিপনের ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করায় সে দরিদ্র কৃষকের জমির ধান জোর করে কেটে নিয়ে যায়। আমরা বাধা দিলেও আবার জমির ধান কেটে নিয়ে যায়।’