প্রচ্ছদ সারাদেশ চাচাশ্বশুর সাবেক রাষ্ট্রপতি, কর্মস্থলে না এসেই বেতন নেন রেহানা

চাচাশ্বশুর সাবেক রাষ্ট্রপতি, কর্মস্থলে না এসেই বেতন নেন রেহানা

অপরাধ: সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের ভাই মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মিঠামইন সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরীফ কামালের স্ত্রী রেহানা আক্তার দীর্ঘ একযুগ কর্মস্থলে না এসেও বেতন-ভাতা উত্তোলন করেছেন প্রায় ৩০ লাখ টাকা।

জানা গেছে, অভিযুক্ত রেহেনা আক্তারের চাচাশ্বশুর মো. আব্দুল হামিদ আড়াই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন প্রভাব খাটিয়ে তার অফিসের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্তা ব্যক্তিদের সহযোগিতায় কর্মস্থলে না গিয়ে ঢাকায় বসবাস করেই বেতন-ভাতা গ্রহণ করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্ত রেহেনা আক্তার কিশোরগঞ্জ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠ পর্যায়ের একজন স্বাস্থ্যকর্মী। মো. আব্দুল হামিদ রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর রেহেনা আক্তার অন্যত্র থেকে বদলি হয়ে ২০১২ সালের ২৬ মে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনার কর্মকর্তার কার্যালয়ে স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে যোগদান করেন। এরপর থেকে তিনি তার কর্মস্থল সদর উপজেলার বৌলাই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে কোনো দিনই যাননি। অথচ প্রতি মাসে তার অফিসের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্তা ব্যক্তিদের সহযোগিতায় চাকরির বিপরীতে তিনি বেতন-ভাতা ঠিকই গ্রহণ করছেন।

এ ব্যাপারে বৌলাই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের খায়রুল ইসলাম ও পল্লী চিকিৎসক মাসুদ মিয়া বলেন, আমাদের এলাকায় স্বাস্থ্যসেবায় রেহেনা আক্তার নামে কোনো স্বাস্থ্যকর্মীকে কখনো পাইনি, এমনকি আমরা তাকে চিনিও না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ মহোদয়ের ভাতিজার স্ত্রীর বিষয়টি আমি শুনেছি। এ ছাড়া সঠিক তথ্যটি এই মুহূর্তে আমার কাছে নেই। কারণ তিনি সরাসরি আমার কাছে রিপোর্ট করেন না। এ বিষয়ে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ভালো বলতে পারবেন।

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. নাজমুল করিম ঢাকা পোস্টকে জানান, সাবেক মহামান্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ মহোদয়ের ভাতিজার স্ত্রী অনুপস্থিত দীর্ঘদিন, তবে উনি মাঝে মাঝে আসতেন, এটা সত্য। একেবারেই আসেন না, এটা বলা যাবে না। বুঝতেই পারছেন, একটা প্রভাবশালী পরিবারের বিরুদ্ধে ইচ্ছা করলেই ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। তা ছাড়া, আমি ২০২২ সালে এখানে যোগদান করেছি। আগে কি হয়েছে তা বলতে পারবো না। তবে গত ১ আগস্ট থেকে তার সঙ্গে আমার অফিসের একেবারেই যোগাযোগ নেই।

এই কর্মকর্তার কাছে প্রতিবেদক জানতে চান, বিগত একযুগ অনুপস্থিত থেকে বেতন-ভাতা প্রায় ৩০ লাখ টাকার মতো উত্তোলন করেছেন। এই বিষয়ে কি বলবেন? তিনি বলেন, এমন হতে পারে, তবে সঠিকটা এখন বলতে পারছি না। আমরা তাকে শোকজ করার প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং অবিলম্বে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হবে।