জাতীয়: ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের এক মাস পূর্ণ হলো আজ রোববার (৮ সেপ্টেম্বর)। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার ব্যবস্থার সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ ভঙ্গুর রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও অর্থনীতিকে জনমুখী করা। এছাড়াও আছে সুষ্ঠু ও অবাধ জাতীয় নির্বাচনের আয়োজনের বাধ্যবাধকতাও। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া রাজনৈতিক দলগুলো যদি নির্বাচনের চাপ দেয় তা হবে আত্মঘাতী।
অস্তিত্বে মিছিলে ছাত্রজনতার রক্ত স্রোত বেয়ে পুনঃজন্মের এই বাংলাদেশের দায়িত্ব ৮ আগস্ট দেয়া হয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে। যুদ্ধ বিধস্ত না হলেও একপ্রকার থমকে যাওয়া বাংলাদেশের সংস্কারের দায়িত্ব মানুষ কাঁধে তুলে দেন অভিজ্ঞ আর নতুনের মিশেলে এই উপদেষ্টা পরিষদকে। শুরু থেকেই দাবি দাওয়া আদায়ে রাজপথে সরব নানা পক্ষ। কখনও তা যৌক্তিক আবার কখনো তা হয়েছে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে। মাঝে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেন ঠিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার কাজটাই এখনও শুরু করতে পারছে না অন্তর্বর্তী সরকার। তারপরও অনেক সিদ্ধান্ত এসেছে, ধীরে হলেও হচ্ছে পরিবর্তন। যেহেতু জনআকাঙ্খার সরকার তাই মানুষ ফলাফলও পেতে চাইছে দ্রুত। সে পথের রূপরেখা কি এই সময়ে দেখাতে পেরেছেন ড. ইউনূস।
দ্য ডেইলি স্টার বাংলার সম্পাদক গোলাম মর্তোজা বলেন, সরকারকে সংস্কার আর জনপ্রত্যাশা এক সঙ্গে করতে হবে। সরকারের যে কাজ আর আমাদের যে ধৈর্যহীনতা তা একটি আরেকটির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক আশরাফ কায়সার বলেন, মনে রাখতে হবে গত সরকার কি কি আচরণের কারণে বিদায় নিয়েছে। তাদের শাসনের যে চেহারা ছিল তার থেকে তাদের ব্যবহারের চেহারা আমাদের বেশি আহত করেছিল। কাজেই যে মৌলিক চেতনায় বাংলাদেশ পরিচালিত হচ্ছে আমরা সেই মৌলিক চেতনায় থাকতে চাই। সেখান থেকে যতটুক সংযোজন বা বিয়োজন দরকার সেটি করতে চাই। একটাই উদ্দেশ্য বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ক্ষমতা যেনো জনগণের হাতে থাকে।
তারা বলছেন, যা আগে হয়নি কখনো, কিংবা হবে এমন চিন্তাও করা যায়নি- সে উদ্যোগ তো শুরু হয়েছে। তবে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া রাজনৈতিক দলগুলো যদি নির্বাচনের চাপ দেয় তবে তা বাংলাদেশের জন্য আত্মঘাতী হবে। আশরাফ কায়সার বলেন, এই বিপ্লোবটি হয়েছে আমাদের বৈষম্যের বিরুদ্ধে। তার মানে আপনি বৈষম্য দূর করবেন, এর মানে আপনি রাষ্ট্র সংস্কার করবেন, সংবিধান সংশোধন করবেন এবং ক্ষমতার ভারসাম্য আনবেন। এরপর যদি নির্বাচন দেয়া হয় তাহলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নির্বাচনের চেহারা পাবে।