ধর্মীয়: বন্যাদুর্গতদের সেবায় হাত বাড়িয়ে দেয়া আমাদের প্রত্যেকের কর্তব্য। সৃষ্টির সেবা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। এটি স্বতন্ত্র ইবাদতও বটে। এ বিষয়ে ত্রুটি হলে কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহর সামনে জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে। প্রশ্ন করা হবে, বস্ত্রহীনদের বস্ত্রদান ও ক্ষুধার্তদের খাদ্যদান সম্পর্কে। ইসলামে মানবীয় গুণাবলির ক্ষেত্রে পরোপকার ও জনকল্যাণমূলক কাজকে অন্যতম শ্রেষ্ঠ গুণ আখ্যা দিয়ে এর প্রতি উৎসাহ দেয়া হয়েছে।
মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘যদি তোমরা প্রকাশ্যে দানখয়রাত করো তবে তা কতই না উত্তম। আর যদি দান গোপনে করো এবং অভাবগ্রস্তদের দিয়ে দাও তবে তা তোমাদের জন্য আরও উত্তম। (এর দ্বারা) আল্লাহ তোমাদের গোনাহ মাফ করে দেবেন। জেনে রাখ, তিনি তোমাদের কাজকর্মের ব্যাপারে অধিক খবর রাখেন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৭১)
সামর্থ্যবান হওয়া সত্ত্বেও যারা বন্যার্তদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে না, তাদেরকেও মহান আল্লাহ সাহায্য করবেন না। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি দয়া করে না, তার প্রতিও দয়া করা হয় না।’ (তিরমিজি: ৪/৩২৩)
বন্যার্তদের জন্য সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্যের হাত সম্প্রসারিত করলে আল্লাহ তাদের জান্নাতে বিশেষ রিজিক দিয়ে সম্মানিত করবেন। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো বস্ত্রহীনকে কাপড় পরাবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের সবুজ রেশমি কাপড় পরাবেন। যে ব্যক্তি কোনো ক্ষুধার্ত ব্যক্তিকে আহার করাবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের ফল খাওয়াবেন। যে ব্যক্তি কোনো তৃষ্ণার্তকে পানি পান করাবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের পবিত্র প্রতীকধারী পানীয় পান করাবেন।’ (আবু দাউদ: ২/১৩০)
বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, তিনি বলেন, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের পার্থিব কষ্টসমূহ থেকে কোনো কষ্ট দূর করবে; কিয়ামতের কষ্টসমূহ থেকে আল্লাহ তার একটি কষ্ট দূর করবেন। যে ব্যক্তি কোনো অভাবীকে দুনিয়াতে ছাড় দেবে আল্লাহ তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে ছাড় দেবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের দোষ গোপন রাখবে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ গোপন রাখবেন। আর আল্লাহ বান্দার সাহায্যে থাকেন যতক্ষণ সে তার ভাইয়ের সাহায্য করে যায়।’ (মুসলিম; আবু দাউদ)।